Friday, February 28, 2014

নোকিয়া এবং অ্যান্ড্রয়েড এর সাতকাহন


“নোকিয়া” মোবাইল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেকের হৃদয়ে জায়গা দখল করতে সার্থক হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। নকিয়ার জনপ্রিয়তার পাওয়ার মূল রহস্য হলো এরা সবচেয়ে ভালো মানের হার্ডওয়্যার দিয়ে ফোন প্রস্তুত করে থাকে। অল্প-কিছুদিন আগেই জানা যায় নকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কথা। তাই স্মার্টফোন প্রেমীদের দৃষ্টি ছিলো অ্যান্ড্রয়েড এবং নকিয়ার নিজস্ব গুণ মিলিয়ে কেমন একটি সেট তৈরি হতে পারে সেইদিকে।

নোকিয়ার এক্স সিরিজ:
নোকিয়া এক্সমোবাইল জগতের বৃহত্তম এই প্রদর্শনীতে নোকিয়া তাদের প্রথম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এতদিন টেক-মহলে কেবল ‘নোকিয়া এক্স’ নামের একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কথা শোনা গেলেও অবশেষে একই সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড-চালিত তিনটি স্মার্টফোনের ঘোষণা দিয়েছে নোকিয়া।বিষয়টা অবাক করার মতো হলেও ফোনগুলোর স্পেসিফিকেশন হতবাক করে দিবে। নকিয়া তাদের এই নতুন অ্যান্ড্রয়েড ফোন সিরিজের নাম রেখেছে নোকিয়া এক্স ফোন সিরিজ।

অপারেটিং সিস্টেম:
অ্যান্ড্রয়েডের ফর্ক ভার্সনের উপর তৈরি করা এই অপারেটিং সিস্টেম এরও নাম দেয়া হয়েছে নোকিয়া এক্স সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম। নকিয়ার মতে এটিই এক্স সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মের প্রথম তিনটি স্মার্টফোন।তবে একই ভাবে অ্যামাজন তাদের কিন্ডল ট্যাবলেটে অ্যান্ড্রয়েড কর্নেল ব্যবহার করে থাকে।

ফোন তিনটির মডেল:
নোকিয়ার এই স্মার্টফোন তিনটির নাম রেখেছে:
১.নোকিয়া এক্স
২. এক্স প্লাস
৩.এক্সএল।
তিনটি প্রায় একই ধরনের এই স্মার্টফোনগুলোর মূল্য ধরা হয়েছে ৮৯ -১০৯ ইউরো। নোকিয়ার বর্তমান সিইও স্টিফেন ইলোপের মতে, তারা তাদের গ্রাহকে একাধিক অপারেটিং সিস্টেম থেকে বাছাই করার সুযোগ দিতে চায়। আর সেই উদ্দেশ্য থেকেই এসেছে নোকিয়া এক্স।

হার্ডওয়্যার:
নোকিয়া এই স্মার্টফোনগুলো মূলত প্রস্তুত করেছে সেইসব মার্কেটকে লক্ষ্য করে যেখানে এখনও কমদামী স্মার্টফোনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই সব অঞ্চলের আঞ্চলিক মোবাইল অপারেটরদের প্রদান করা স্বল্পমূল্যের স্মার্টফোনের সাথে প্রতিযোগিতা করতেই নোকিয়া মূলত উন্মুক্ত করেছে এই

কি থাকছে নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েডে?
ফোনের জগতে নোকিয়া ফোনের স্থায়িত্ব ও ডিজাইন সবসময়ই ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী ছিল। যে কারণে ফিচার ফোনের বাজারে আজও নোকিয়া বেশ জনপ্রিয়। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বাজারে কেবল সুন্দর ডিজাইন আর চকচকে রঙ দিয়ে মন গলানো যাবে না। লাগবে নূন্যতম ভালো হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার পারফরম্যান্স। দুঃখের বিষয় হলো, বেশিরভাগ প্রতিবেদকরাই নোকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো হাতে নিয়ে হতাশ হয়েছেন। কিন্তু কেন?

স্পেসিফিকেশন:
ডিসপ্লে: নোকিয়া এক্স সিরিজের এক্স ও এক্স প্লাস ফোনে রয়েছে ৮০০x৪৮০ রেজুলেশনের ৪ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে। আর এক্সএল এর ক্ষেত্রে এই ডিসপ্লের আকার ৫ ইঞ্চি।
প্রসেসর: এছাড়া এই সিরিজের তিনটি ফোনেই ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮২২৫ মডেলের ১ গিগাহার্জ প্রসেসর।এই প্রসেসর মূলত এআরএমের কর্টেক্স এ৫ আর্কিটেকচার ভিত্তিক যার সাথে জিপিউ হিসেবে আছে কোয়ালকম আড্রিনো ২০৩। এই প্রসেসর মূলত স্মার্টফোনে সাধারণ মানের কাজ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
র‍্যাম: র‍্যামের দিক থেকে নোকিয়া এক্সে আছে ৫১২ মেগাবাইট র্যাআম এবং নোকিয়া এক্স প্লাস এবং এক্সএলে আছে ৭৬৮ মেগাবাইট র্যাআম। ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে আছে ৪ গিগাবাইট স্টোরেজ যা মাইক্রোএসডি কার্ডের মাধ্যমে ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। নোকিয়া এক্স প্লাস এবং এক্সএলের ক্ষেত্রে একটি ৪ গিগাবাইট মেমোরি কার্ড ফ্রিতে প্রদান করা হবে।
ক্যামেরা: নোকিয়া এক্স এবং এক্সপ্লাস উভয় ফোনেই আছে ফ্ল্যাশবিহীন ৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এই দুইফোনের ক্ষেত্রে স্কাইপ অথবা ভিডিও কল করার জন্যে সেকেন্ডারি বা ফ্রন্ট সাইডে কোন ক্যামেরা নেই। অপরদিকে এক্সএলে আছে ৫ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস ক্যামেরা এবং ফ্ল্যাশ এবং স্কাইপ ও ভিডিও কল করার জন্যে আছে সামনে ২ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা।
অন্যান্য: এসবের পাশাপাশি তিনটি ফোনেই আছে ওয়াইফাই, জিপিএস,৩জি ও ডুয়াল সিম সুবিধা।

অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার: নোকিয়া এক্সসফটওয়্যার উইন্ডোজ, অ্যান্ড্রয়েড এবং নোকিয়া আশা ওএস প্ল্যাটফর্মকে একত্র করা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড জেলি বিন ৪.১.২ ভিত্তিক অপেনসোর্স লিনাক্স কর্ণেল। যেহেতু খুব শক্তিশালী প্রসেসর অথবা খুব বেশি র্যা ম ব্যবহার করা হয়নি এই ফোনের পারফরম্যান্স বেশ ল্যাগ করবে। আর যারা এই ফোনের হ্যান্ডস অন অথবা এর উন্মোচন অনুষ্ঠান খেয়াল করেছেন তারাও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

অ্যাপ: নামে অ্যান্ড্রয়েড হলেও এতে নেই কোন গুগলের সুবিধা অথবা প্লে স্টোর, বরং ব্যবহার করা হয়েছে নোকিয়ার নিজস্ব স্টোর।যদি নোকিয়ার স্টোরে কোন অ্যাপ না পান তবে তাদের চুক্তিবদ্ধ অন্য অ্যাপস্টোরে সে অ্যাপ থাকলে তার লিঙ্কও প্রদান করবে নোকিয়া। এক্ষেত্রে আছে রাশিয়ার ইয়ান্ডেক্স এবং চায়নার ওয়ানমোবাইল। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপগুলোতে খুব সামান্য পরিবর্তন এনেই প্রায় সকল অ্যাপই চালানো যাবে এই ফোনে।

বিল্ডিন অ্যাপ্স: এর মধ্যে ডিফোল্ট অ্যাপ হিসেবে থাকছে স্কাইপ, ওয়ানড্রাইভ, আউটলুক প্রভৃতি মাইক্রোসফট সেবা। মাইক্রোসফট সব নোকিয়া এক্স ব্যবহারকারীকে বিনামূল্যে বিশ্বের ৬০টি দেশের ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে দিবে স্কাইপের মাধ্যমে। ওয়ানড্রাইভে প্রদান করবে ১০ গিগাবাইট স্টোরেজও।
তবুও তো সাধারণ গ্রাহকের কথা ভেবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, নোকিয়া কি পারবে এই ফোন দিয়ে গ্রাহকের মন জয় করতে?

1 comment:

celebwiki said...

I'm excellent at financial planning, and giving advice about weather to buy certain items or cut back. how can i start a website giving out this advice?.

Popular Posts

Pageviews